হুমায়ূন আহমেদ এবং সাহিত্যের রসায়ন

26/06/2013 03:19

শ্রদ্ধেয় হুমায়ূন আহমেদ স্যারের লেখা বই গুলো বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই ছোট গল্পের মত। স্যারের লেখা প্রায় সব গুলো বই ই আমার পড়া হয়েছে। কিছু কিছু ক্ষেত্রে স্যারের লেখা গুলো ছোট গল্পকে ছাড়িয়ে গেছে। হঠাৎ শুরু করেছেন আবার হঠাৎ শেষ করেছেন এমন বিশিষ্টের কারনে স্যারের লেখা কে ছোট গল্প বললে শত ভাগ অন্যায় হবে। বরং স্যারের লেখায় আরও কি যেন আছে যা আমাদের ছোট গল্পে নেই। স্যারের লেখা পড়তে শুরু করলেই যেন কি হয়ে যায়। স্যার খুব সহজেই তার চরিত্র গুলোকে মাথায় ডুকিয়ে দেন। এর পরে হ্যামেলিনের বাঁশি ওয়ালার মত পাঠককে নিয়ে যান জাদুকরের দেশে। যেখানে শুধু হা হুতাসের শব্দ শুনা যায়। কারন বাশি ওয়ালা হঠাৎ করেই তাদেরকে অচেনা অজানা এক সগরে ফেলে হারিয়ে যান হওয়ায় ভেসে। পাঠকের কি যেন জানার বাকি থেকে যায়। স্যারের প্রত্যেকটি বই পড়ার পরেই আমার মাথায় একটা জিনিস উকি মারে, গল্পটা যেখানেই শেষ হোকনা কেন স্যারের মাথায় এর সমাপ্তি কি ছিল?  স্যারকি পারতেন না বইয়ের শেষে কয়েকটি পাতায় সেই পরিণতিটা লিখে রাখতে। আমাদের আসলেই সেই পরিণতিটা কোন দিনই জানা হবেনা। হৈমন্তী, বিলাসী, ফটিক এই গল্প গুলো হঠাৎ শেষ হলেও এর পরিনতি পাঠক জানে। কিংবা খুঁজে বের করতে পেরেছে। কিন্তু স্যারের লেখা গুলোর পরিনতি কি আমরা কোনদিন বের করতে পারব। হয়ত পারব কিন্তু সেটা কি স্যারের চিন্তার সাথে মিলবে? হিন্দি বডি গার্ড ছবিটা দেখে কেন জানি আমার হুমায়ূন স্যারের কথা বার বার মনে পড়েছে। কেন জানি মনে হয়েছে স্যার যদি গল্পটা লিখতেন তাহলে মায়া যখন ট্রেন থেকে মোবাইল ফোন ফেলে দিয়েছিল সেখানেই স্যার গল্পটা শেষ করে দিতেন। কিন্তু সেটা হয়নি কারন সেই গল্পটা স্যার লিখেননি। সবচেয়ে মজার ব্যাপার হচ্ছে স্যারের গল্প গুলো খুব সাধারণ ভাবেই আমাদের বাস্তব জীবনকে প্রভাবিত করে। স্যারের চরিত্র গুলো কখনোই বইয়ে সীমাবদ্ধ থাকেনি বরং বস্তবে চলে এসেছে। আমাদের ছোট গল্প আর স্যারের গল্পের সাথে এখানেই আসল পার্থক্য।