সালাম পারস্পরিক ভালোবাসা সৃষ্টি করে

30/05/2013 16:01

বিস্মিল্লাহির রাহমানির রাহীম,

“হযরত আবু হুরাইয়া (রা) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, হযরত রাসূলে করিম (সা) বলেছেন : যাঁর হাতে আমার প্রাণ তাঁর শপথ, তোমরা বেহেশতে প্রবেশ করবে না যতক্ষণ না তোমরা ঈমান আনবে এবং তোমরা ঈমানদার হবে না যতক্ষণ না তোমরা পরস্পরকে ভালোবাসবে। আমি কি তোমাদেরকে এমন কাজের কথা জানাবো না যা করলে তোমরা পরস্পরকে ভালোবাসতে পারবে? তা হলো তোমরা সকলে পারস্পরিক সালামের ব্যাপক প্রচার ও বিস্তার করো।” (তিরমিযী, মুসলিম)

 

সুপ্রিয় বন্ধুরা, কোনো বিষয়ে পূর্ণ সত্যতা প্রকাশ করতেই কেবল আল্লাহর শপথ করা হয়। আমাদের প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ (সা)ও সেটিই করেছেন। তিনি আমাদের জীবনের একটি গুরুত্বপূর্ণ দিককে বোঝানো জন্যই প্রথমে শপথ করে পরে মূল বক্তব্য পেশ করেছেন।
 

হাদিসটির মূল বক্তব্য হলো “তোমরা ঈমানদার হবে না যতক্ষণ না তোমরা পরস্পরকে ভালোবাসবে”। এর তাৎপর্য হলো কারোর ঈমানের পূর্ণতা লাভ করবে না এবং বাস্তব জীবনব্যবস্থা ঈমানদার হিসেবে গড়ে উঠবে না পারস্পরিক ভালোবাসা ছাড়া। আর ঈমান ছাড়া তো বেহেশতে যাওয়ার কোনো প্রশ্নই উঠবে না। কারণ জান্নাতে যাওয়ার প্রথম শর্তই হচ্ছে ঈমান।


সালাম এমন একটি পন্থা যার দ্বারা পারস্পরিক নিবিড় সম্পর্ক গড়ে ওঠে। বাস্তব ক্ষেত্রেও দেখা যায়, যে সমাজে সালামের প্রচলন নেই সেখানে পারস্পরিক ঐক্য, সংহতি ও সুসম্পর্কের পরিবর্তে ভাঙ্গন ও বিপর্যয় সৃষ্টি হয়। বস্তুত মুসলিম মানেই কর্তব্য হচ্ছে অপর মুসলমানের সাক্ষাৎ পাওয়া মাত্রই সালাম দেয়া। আর এটি মুসলমানদের অন্যতম একটি সাংস্কৃতিক দিকও বটে।


হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আমর (রা) থেকে একটি হাদিস বর্ণিত আছে। এক ব্যক্তি রাসূলকে (সা) জিজ্ঞেস করলেন, কোন্ ধরনের ইসলাম পালন উত্তম? তিনি জবাবে বললেন, তুমি খাবার খাওয়াবে এবং সালাম প্রদান করবে যাকে চেন এবং যাকে চেন না তাকেও। (সহীহ বুখারী ও মুসলিম)


বন্ধুরা, ইসলামী সংস্কৃতির এই অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ উপাদান ‘সালাম’কে যদি আমরা আমাদের মা-বাবা, ভাই-বোন, প্রতিবেশী, শিক্ষক, আত্মীয়-অনাত্মীয়, বন্ধু-বান্ধব, চেনা-অচেনা সকলের মাঝে ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে দেয়ার কাজ শুরু করি তাহলে একদিকে যেমন সমাজে পারস্পরিক ভ্রাতৃত্ব-ভালোবাসা সৃষ্টি হবে, হিংসা-বিদ্বেষ, হানাহানি দূর হবে, অন্যদিকে আমাদের ঈমানের পূর্ণতা আসবে। ফলে পরকালে জান্নাতে যাওয়া আমাদের জন্য সহজ হবে।

গ্রন্থনা : মোহাম্মদ ইয়াসীন আলী